Thursday, April 10, 2025

বৈশ্বিক উষ্ণতা : দরিদ্র দেশগুলি উন্নত দেশগুলির জন্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে

- Advertisement -

এই বিষয়ে সবাই একমত, যেভাবে বিশ্ব জুড়ে উত্তরোত্তর কার্বন নিঃসরণ ঘটছে তাতে ক্রমাগত পরিবেশ দূষণ হওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে পৃথিবীর বৈশ্বিক উষ্ণতা। পৃথিবী ক্রমশ বাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। বাড়ছে বন্যা, দাবানল, ঘূর্ণিঝড়, খরা এর মতো একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বেড়ে উঠছে সমুদ্র জলস্তরও। পরিবেশবিদ বা পরিবেশ বিজ্ঞানীরা এবিষয়ে বহুবার সতর্ক করে দিয়েছেন ও তাঁরা এখনও করছেন।


বৈশ্বিক উষ্ণতা
Image by Luaks Johnns from Pixabay

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা গ্লাসগো কপ ২৬ সম্মেলন সম্প্রতি শেষ হয়েছে। এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন বিশ্বের ২০০টি দেশের প্রতিনিধিরা। জাতিসংঘের আয়োজিত এই সম্মেলনে কিছু বিষয় নিয়ে চলেছে বাকবিতণ্ডা। কিছু বিষয়ে সকলে একমত হয়েছে। আবার কিছু বিষয়কে অনেকে এড়িয়ে গিয়েছে। এমনটি হবারই ছিল। কারণ প্রতিটা দেশই চাইবে নিজের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া।

এই সম্মেলনে আলোচিত বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে পরিবেশ দূষণ ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ছিল অন্যতম বিষয়। এই বিষয়ে সবাই একমত, যেভাবে বিশ্ব জুড়ে উত্তরোত্তর কার্বন নিঃসরণ ঘটছে তাতে ক্রমাগত পরিবেশ দূষণ হওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে পৃথিবীর বৈশ্বিক উষ্ণতা। পৃথিবী ক্রমশ বাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। বাড়ছে বন্যা, দাবানল, ঘূর্ণিঝড়, খরা এর মতো একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বেড়ে উঠছে সমুদ্র জলস্তরও। পরিবেশবিদ বা পরিবেশ বিজ্ঞানীরা এবিষয়ে বহুবার সতর্ক করে দিয়েছেন ও তাঁরা এখনও করছেন।

যার ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দরিদ্র দেশগুলি। কারণ উন্নত দেশগুলির মতো তাদের হাতে বারংবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই। অর্থনৈতিক দিক থেকে একেবারেই পিছিয়ে পড়া দেশগুলির পরিস্থিতি এক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ। অথচ দূষণ কখনও সীমারেখা মানে না। উন্নত দেশগুলি যেভাবে শিল্পোন্নতির জন্য কার্বন নিঃসরণ ঘটিয়ে চলেছে, তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এই সমস্ত দরিদ্র দেশগুলি।

ইতিহাসে শিল্পযুগ শুরু হওয়ার সময় থেকেই পশ্চিমা বিশ্ব ক্রমাগত কার্বন নিঃসরণ করে চলেছে। বার্ষিক হিসাব অনুযায়ী আমেরিকা, কানাডা সহ ইউরোপের উন্নত দেশগুলি বার্ষিক প্রায় ৫০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ ঘটিয়ে থাকে। যার ফলে গত ১৭৫ বছরে পৃথিবীর বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়েছে প্রায় ১.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

- Advertisement -

সে তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলির এই হার কিছুটা কম। এক্ষেত্রে অবশ্য সবার আগে এগিয়ে রয়েছে চিন। পরিবেশ গবেষকদের দাবি, বর্তমানে চিনই সর্বাধিক কার্বন নিঃসরণ দেশ। দেশটি একাই বছরে ৩১ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ করে থাকে। এর প্রায় পরেই রয়েছে ভারত। এই দেশ বছরে সারা বিশ্বের প্রায় ৭ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ করে। তবে ভারতের বহু মানুষ এখনও দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে। কয়লা বা পেট্রোলিয়াম জ্বালানির বিকল্প শক্তির ব্যবহারেও এই দেশ অনেকটাই পিছিয়ে। তার পরেও চলতি কপ ২৬ সম্মেলনে ভারত ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ‘নিট জিরো’ করার কথা জানিয়েছে।

অপরদিকে এশিয়া ও আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ দরিদ্র। বলতে গেলে এই দেশগুলি কার্বন নিঃসরণের তুলনায় কার্বন শোষণ করে বেশি। অথচ বৈশ্বিক উষ্ণনায়ন ও পরিবেশ দূষণের ফল তাদেরকেই ভোগ করতে হয় বেশি। এর আগের কপ সম্মেলনে উন্নত দেশগুলি একমত হয়েছিল জলবায়ু পরিবর্তনের মতো পরিস্থিতি মোকাবিলার সহায়তায় ক্ষতিপূরণ বাবদ এই দরিদ্র দেশগুলিকে ২০২০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার দেবে। কিন্তু সময়সীমা অতিক্রম করলেও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। সদ্য শেষ হওয়া এই কপ ২৬ সম্মেলনেও এই বিষয়ের জট কাটানো সম্ভব হয়নি। যদিও এই সম্মেলনের চূড়ান্ত চুক্তি অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে এই ক্ষতিপূরণ দ্বিগুণ করার কথা বলা হয়েছে।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর