আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা (আইএলও) চলতি বছরেই সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বের সর্বমোট একটি বেকারত্ব এর সমস্যার ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। সেখানে দেখানো হয়েছে, ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে বেকারের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৮ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ। আর অনুমান করা হচ্ছে ২০২০ সালে সেই সংখ্যা হবে ১৯ কোটি ৩ লক্ষ। অর্থাৎ বিশ্বের ৫ জনের ১ জনকে ধরা হচ্ছে বেকার।

‘চাকরি চাই! চাকরি চাই!’, গলা ফাটিয়ে চিৎকার করেও উপযুক্ত চাকরির সন্ধান না পাওয়াদের সংখ্যা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও দেশে শিক্ষিতের হার বাড়ছে, সে তুলনায় তার যোগ্যতার ওপর নির্ভর করে কর্মসংস্থানের হার বাড়ছে কোথায়? আর তাই গ্রাজুয়েশন শেষ করেও মোড়ের মাথায় চপ বা চায়ের দোকান খোলা ছাড়া কোনও রাস্তা দেখছে না এক শ্রেণীর যুবক। পারিবারিক অবস্থা যাদের কিছুটা ভালো, তারা নেমে পড়ছে ছোটো-খাটো যে কোনও ব্যবসা করতে। তবুও তাদের অধিকাংশের দাবি, ব্যবসাতেও আসছে না অর্থ। কারণ দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটাই খারাপ। তাই নতুন ব্যবসাক্ষেত্র গড়ে তোলা যুবক সম্প্রদায়ের বেশিরভাগই এখনও প্রকৃত অর্থে রয়ে গিয়েছে বেকার।
যদিও বিশ্বজুড়ে চলছে এই বেকারত্ব এর কঠিন সমস্যা। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) চলতি বছরেই সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বের সর্বমোট একটি বেকারত্ব এর সমস্যার ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। সেখানে দেখানো হয়েছে, ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে বেকারের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৮ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ। আর অনুমান করা হচ্ছে ২০২০ সালে সেই সংখ্যা হবে ১৯ কোটি ৩ লক্ষ। অর্থাৎ বিশ্বের ৫ জনের ১ জনকে ধরা হচ্ছে বেকার। আর এই হারে চলতে থাকলে ২০২১ সালে বেকারের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৯ কোটি ৪৬ লক্ষে।
ভারতে এই হার অনেকটাই বেশি। ২০১৮ সালে যেখানে বেকারের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৮৬ লক্ষ, সেখানে ২০১৯ সালে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ কোটি ৯০ লক্ষে। অর্থাৎ এই দেশে প্রতি ৫ জনের ২ জন বেকারত্ব এর সমস্যায় ভুগছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, নতুন করে কর্মসংস্থান না হলে এই হার ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী হবে। যদিও নতুন করে কর্মসংস্থানের দৌড়ে ভারত অনেকটাই পিছিয়ে পড়ছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলির থেকেও। আর সেই সাথে বেহাল হতে বাধ্য হচ্ছে দেশের অর্থনীতির অবস্থাও।
দেশের যুবক সমাজের কর্মসংস্থানের সঙ্গে অর্থনীতির যোগসূত্র অত্যন্ত নিবিড়। কারণ যে কোনও দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে কর্মসংস্থান। এ ব্যাপারে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, দেশের অর্থনীতির হাল তখনই ফিরবে যখন দেশের সাধারণ মানুষ বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ আসবে। কারণ তারা সেই অর্থ খরচ করবে নিজেদের জীবনধারাকে উন্নয়ন ঘটাতে। সেই সঙ্গে সরল হবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও।
আর এর জন্যে চাই নতুন কর্মসংস্থান। একমাত্র নতুন কর্মসংস্থানই পারে দেশের যুবক সমাজ এবং দরিদ্র মানুষের হাতে সেই অর্থের যোগান দিতে। যদিও প্রতিশ্রুতির শব্দবাণ প্রয়োগ করলেও সরকারিভাবে তেমন কোনও উদ্যোগ নজরে পড়ছে না।