পরিশ্রমী শ্রমিক বা ব্যস্ত পথচারীদের খাবারের কথা চিন্তা করেই ইউরোপে শিল্পাঞ্চলের একশ্রেণীর দোকানদার পূর্ব থেকে তৈরি করা কিছু খাবার সাজিয়ে রাখতো নিজেদের দোকানে। খুব কম সময়ের মধ্যে সেগুলি হালকা গরম করে বা তাজা করে ক্রেতাদের বিক্রয় করত তারা। পরবর্তীকালে দ্রুত পরিবেশন করা এই খাবারগুলিই ফাস্টফুড নামে পরিচিত হয়েছে।

ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের সময় পরিশ্রমী শ্রমিক বা ব্যস্ত পথচারীরা কাজের ফাঁকে ফাঁকে স্বল্প সময়ের মধ্যে কিছু খাবার খেতে চায়তো। অনেক সময় তাদের কাছে তৈরি করা কোনও খাবার থাকত না। অথবা অনেক সময় খাবার ফুরিয়েও যেত। তখন তাদের না খেয়েই করতে হত পরিশ্রমী কাজগুলি।
এই সমস্ত পরিশ্রমী শ্রমিক বা ব্যস্ত পথচারীদের খাবারের কথা চিন্তা করেই ইউরোপে শিল্পাঞ্চলের একশ্রেণীর দোকানদার পূর্ব থেকে তৈরি করা কিছু খাবার সাজিয়ে রাখতো নিজেদের দোকানে। খুব কম সময়ের মধ্যে সেগুলি হালকা গরম করে বা তাজা করে ক্রেতাদের বিক্রয় করত তারা। পরবর্তীকালে দ্রুত পরিবেশন করা এই খাবারগুলিই ফাস্টফুড নামে পরিচিত হয়েছে।
পরে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করলে এই ধরণের খাবার ও খাবারের দোকান সমগ্র বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বলা বাহুল্য, আমাদের দেশের গ্রাম-বাংলার অতি সাধারণ গ্রামগুলিতেও ফাস্টফুড ও তার দোকান বা রেস্টুরেন্ট বেশ সুনামের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে।
এই সমস্ত রেস্টুরেন্টগুলিতে যে সমস্ত ফাস্টফুড এখন পাওয়া যাচ্ছে এগুলি কিন্তু নির্দিষ্ট কোনও দেশ বা অঞ্চলের নয়। বিভিন্ন সময়ে ও বিভিন্ন অঞ্চলে এই ফাস্টফুড গুলি তৈরি হয়েছে। পরে সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এগুলির রেসিপিতেও এসেছে নানান পরিবর্তন। আসুন জেনে নিই কোন ফাস্টফুড কোথায় তৈরি হয়েছে।
চাউমিন
রেস্টুরেন্টগুলির অন্যতম জনপ্রিয় ফাস্টফুড এই চাউমিন। বলার অপেক্ষা রাখে না চাউমিন মূলত এসেছে চিন দেশ থেকে। চিনের নিত্য দিনের খাবার নুডুলসকে তেলে ভেজে তার সঙ্গে বিভিন্ন সবজি বা মাংস মিশিয়ে যে পদ তৈরি করা হয় তাকেই বলা হয় চাউমিন। চিনা শব্দ চাউ মিয়াং বিভিন্ন সময়ে বিকৃতি ঘটে চাউমিন শব্দের জন্ম দিয়েছে।
মোমো
এই ফাস্টফুড টি এসেছে তিব্বত থেকে। তিব্বতিদের এটিই নিত্যদিনের খাবার। পরে আমাদের দেশে পৌঁছে এই খাবার ফাস্টফুড এ পরিণত হয়েছে। তিব্বতে ময়দার খোলের মধ্যে চমরী গাইয়ের মাংস পুর হিসাবে ব্যবহার করার প্রথা থাকলেও আমাদের দেশে মোটামুটি মুরগির মাংস দিয়েই কাজ চালিয়ে নেন রেস্তোরা মালিকেরা।
এগরোল
এই ফাস্টফুড টি প্রথম কোথায় তৈরি হয়েছিল তা নিয়ে কিছুটা বিতর্ক রয়েছে। মূলত চাইনিজ রেস্টুরেন্টগুলিতেই এগরোল-এর বেশি দেখা মেলে, তাই অনেকেই চিন দেশ থেকে এর আগমন ঘটেছে বলে মনে করেন। তবে অনেকের ধারণা এর জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯৩০ সাল নাগাদ মার্কিন লেখক অ্যান্ড্রু কোয়ে তার বইয়ে এ ব্যাপারে উল্লেখ করেছেন।
ধোসা
এই ফাস্টফুড টির জন্ম যে দক্ষিণ ভারতে সে ব্যাপারে অবশ্য সকলেই একমত। মূলত চাল ও ডাল দিয়েই এই খাবার তৈরি করা হয়। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে আটা দিয়েও এর তৈরি করার রীতি রয়েছে।
চপ
বিকাল বা সন্ধ্যা নামলেই গ্রাম-বাংলার ছোট রেস্টুরেন্টগুলিতে সেজে ওঠে চপ। এই খাবারটি গ্রাম-বাংলার একেবারেই নিজস্ব ফাস্টফুড। মশলা দিয়ে আলুর মাখনাকে বেসনের গোলার মধ্যে ডুবিয়ে তেলে ভেজে চপ তৈরি বহুদিন থেকেই গ্রাম-বাংলার সঙ্গে যুক্ত। চপ এখন অবশ্য শুধুমাত্র আলু দিয়েই তৈরি হয় না। মোচা, পটল, টমেটো দিয়েও চপ তৈরি করা হয়।
কাটলেট
চপের মতো অনেকটা দেখতে হলেও কাটলেটের রেসিপি কিছুটা আলাদা। এখানে বেসনের গোলার পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় বিস্কুট বা পাউরুটির গুড়ো। এর স্বাদও জিভে জল আনার মতো। কাটলেট একটি ফরাসি শব্দ। সুতরাং বুঝতেই পারা যাচ্ছে, এই ফাস্টফুড টি এসেছে ফ্রান্স থেকে।