প্রভাত সিং নিজস্ব উদ্যোগে কোনও কৃতি মানুষের ফেস্টুন নিয়ে পায়ে হেঁটে বা টোটো সহযোগে বেরিয়ে পড়েন শহর পরিক্রমায়। অনেক উৎসাহী যুবকও সে সময় তাঁর সঙ্গে পা মেলাতে এগিয়ে আসে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসবের জন্য সম্পূর্ণ খরচ তাঁকেই বহন করতে হয়। কখনও বা কোনও সহৃদয় ব্যক্তি কিছু অর্থ সাহায্যও এগিয়ে দেন তাঁর দিকে।

প্রভাত সিং, যার বীরভূম জেলার আমোদপুর শহরের পূর্ব দিকে সাঁইথিয়া ব্লকের সামনেই রয়েছে একটি ছোট্ট দোকান। আর এই ছোট্ট দোকানটির উপর নির্ভর করেই চলে তাঁর ছোট্ট সংসার। সংসারে স্ত্রী ছাড়াও রয়েছে ছোট্ট দুটি কন্যা সন্তান। তবে এত কিছুর পরেও কোনও অংশে ভাঁটা পড়েনি তাঁর যে কোনও সমাজসেবা মূলক কাজের উৎসাহে। বিশেষতঃ দেশের যে কোনও সফল ব্যাক্তির জন্মদিন বা মৃত্যু দিন অথবা বার্ষিকী পালন থেকে শুরু করে তাঁদের নামে বড় বড় হেডলাইন সহ ফ্লেক্স ফেস্টুন তৈরি করে নিজের দোকানের সামনে টাঙিয়ে রাখে সে।
এই যেমন লতা মঙ্গেশকরের জন্মদিন, তাঁর ভারত রত্ন পাওয়া, সুচিত্রা সেনের মৃত্যু বার্ষিকী, সৌরভ গাঙ্গুলির বি.সি.সি.আই ও সি.বি.আই এ প্রেসিডেন্ট হওয়া, ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়, এ.পি.জে আব্দুল কালামের মৃত্যু বার্ষিকী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির জন্মদিন পালন, মহিলা ক্রিকেটের টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের মতো অসংখ্য সাফল্যের তথ্য তুলে ধরেন তার ছোট্ট দোকানটির সামনে।
যদিও এর জন্য তাঁকে এলাকার বকাটে মানুষগুলির কাছে কম টিটকিরি শুনতে হয় না। কিন্তু এই প্রভাত সিং কারও কথা কানে না তুলে সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগে, নিজের আনন্দেই এই কাজগুলি করে চলেছেন বছরের পর বছর ধরে। শত অভাবের মধ্যেও এই কাজে কখনও ভাঁটা পড়তে দেখেনি এলাকার মানুষেরা।
এর পাশাপাশি মাঝেমধ্যেই প্রভাত সিং নিজস্ব উদ্যোগে কোনও কৃতি মানুষের ফেস্টুন নিয়ে পায়ে হেঁটে বা টোটো সহযোগে বেরিয়ে পড়েন শহর পরিক্রমায়। অনেক উৎসাহী যুবকও সে সময় তাঁর সঙ্গে পা মেলাতে এগিয়ে আসে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসবের জন্য সম্পূর্ণ খরচ তাঁকেই বহন করতে হয়। কখনও বা কোনও সহৃদয় ব্যক্তি কিছু অর্থ সাহায্যও এগিয়ে দেন তাঁর দিকে।
এই সব স্মরণীয় ব্যাক্তিদের স্মরণ করা ছাড়াও নেতাজি জয়ন্তী, স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, সরস্বতী পুজোর মতো বিভিন্ন অনুষ্ঠান তিনি করে থাকেন নিজস্ব উদ্যোগে।
তাই সত্যি কথা বলতে, বর্তমান সময়ে এত আর্থিক মন্দার বাজারে শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রভাত সিং এর মতো ব্যক্তিরা এই সব মহৎ উদ্যোগ নেন বলেই মহৎ মনিষীরা আজও বেঁচে রয়েছেন মানুষের হৃদয় মাঝে। আর সেই সঙ্গে ওই সব মহৎ ব্যক্তিদের সম্পর্কে বহু তথ্যও জানতে পারে বর্তমান প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীরা।