Thursday, April 10, 2025

পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব সন্তান না হওয়ার জন্যেও কিছুটা দায়ী থাকে

- Advertisement -

বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ নির্দিষ্ট সংখ্যক কমে গেলেই পুরুষরা বন্ধ্যাত্ব এ ভুগতে পারেন। ব্রিটিশ স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান এনএইচএস তাদের সমীক্ষায় জানিয়েছে, সন্তান না হওয়া দম্পতিদের জন্য প্রায় এক তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রেই পুরুষরা দায়ী থাকে। এসব পুরুষদের শুক্রাণুর মান হয় উর্বর নয়, নতুবা সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়। আন্তর্জাতিক গাইডলাইন বলছে, ১ মিলিলিটার বীর্যে দেড় কোটি শুক্রাণু থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু এর কম হলে পুরুষরা বন্ধ্যা হতে পারে।


বন্ধ্যাত্ব
Image by 4144132 from Pixabay

এই বিশ্বে নিজের পরবর্তী প্রজন্মকে টিকিয়ে রাখার বাসনা অবশ্যই একটি সহজাত প্রবৃত্তি। আবার এটি প্রাকৃতিক বিষয়ও বটে। শুধুমাত্র যদি মানুষের বংশ বিস্তারের দিকে নজর দেওয়া হয়, তবে এমনও দম্পতিকে খুঁজে পাওয়া যাবে, যাঁরা বছরের পর চেষ্টা করেও সন্তানের মুখদর্শন করতে পারেননি। বিংশ শতাব্দী বা তার পূর্বের ঘটনা হলে এর দায় ভারতীয় উপমহাদেশে নিশ্চিতভাবে শুধুমাত্র স্ত্রীর উপরই বর্ষিত হত। কিন্তু এক বিংশ শতাব্দীর এই আধুনিক পর্যায়ে মেডিক্যাল পরীক্ষায় নিশ্চিত না হয়ে কখনওই এককভাবে কারও উপর দায় বর্ষানো হয় না। এক্ষেত্রে পুরুষ ও স্ত্রী উভয়ের যে কেউ বা উভয়ই বন্ধ্যা হতে পারেন। যদিও পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব নিয়ে তেমন কোনও আলোচনা কোথাও হয় না।

সম্প্রতি বিবিসি সংবাদ মাধ্যমে পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব নিয়ে বিশেষ একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টটি থেকে জানা যাচ্ছে, বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ নির্দিষ্ট সংখ্যক কমে গেলেই পুরুষরা বন্ধ্যাত্ব এ ভুগতে পারেন। ব্রিটিশ স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান এনএইচএস তাদের সমীক্ষায় জানিয়েছে, সন্তান না হওয়া দম্পতিদের জন্য প্রায় এক তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রেই পুরুষরা দায়ী থাকে। এসব পুরুষদের শুক্রাণুর মান হয় উর্বর নয়, নতুবা সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়। আন্তর্জাতিক গাইডলাইন বলছে, ১ মিলিলিটার বীর্যে দেড় কোটি শুক্রাণু থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু এর কম হলে পুরুষরা বন্ধ্যা হতে পারে।

গোটা বিশ্ব জুড়ে চালানো ২০১৫ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিশ্বের প্রায় ১৫ শতাংশ দম্পতি নিঃসন্তান। আর এই শতাংশেরও ২০-৩০ শতাংশের জন্য দায়ী একমাত্র পুরুষ। ওই সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে, পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব এর সমস্যা অন্য মহাদেশের তুলনায় আমেরিকা ও ইউরোপ মহাদেশে সর্বাধিক। আমেরিকা ও ইউরোপে এই সমস্যা রয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এশিয়ায় পুরুষদের এই সমস্যার সংখ্যা কিছুটা কম, প্রায় ৩৭ শতাংশ।

কেনও বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যায়, এই বিষয়েও বিবিসির ওই রিপোর্টে আলোচনা করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম বায়ুদূষণ, হরমোন উৎপাদন কম হওয়া, অতিরিক্ত তাপমাত্রা, ক্লাইনফেলটার সিনড্রোমের মতো জেনেটিক সমস্যা, অণ্ডকোষের নালী বন্ধ হওয়া, যৌনাঙ্গের বিভিন্ন সংক্রমণ, ভ্যারিকোসিলস, অতিরিক্ত মাদক সেবন প্রভৃতি।

- Advertisement -

তবে শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ানো ও স্বাস্থ্য বৃদ্ধির উপায়ও ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রেও বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, দৈনন্দিন জীবনের কিছু পরিবর্তন শুক্রাণুর সংখ্যা ও স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। যেহেতু অতিরিক্ত তাপমাত্রা শুক্রাণুর স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারক। তাই অধিক তাপমাত্রায় বেশিক্ষণ স্থায়ী না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এবিষয়ে তাঁরা অত্যন্ত চাপা অন্তর্বাস ব্যবহার করতে নিষেধ করছেন। কারণ চাপা অন্তর্বাস প্রায় ১ ডিগ্রী পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

এর পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা আরও পরামর্শ দিচ্ছেন, সন্তান ধারণ করার বাসনা থাকলে মাদক সেবন বন্ধ করা একান্ত প্রয়োজন। কারণ মাদক সেবন শুক্রাণুর সংখ্যা ও স্বাস্থ্য হ্রাস করে দেয়। দৈনন্দিন সঠিক পুষ্টিকর খাবারও শুক্রাণুর মানকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিনের খাবারে যেন অবশ্যই ভাত বা রুটি, ৫ প্রকার ফল ও সবজি, ডাল, দই থাকে। এরই সঙ্গে মানসিক চাপ হ্রাস করাও প্রয়োজন।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর