Thursday, April 10, 2025

নিরলসভাবে সুন্দরবন এ কাজ করে চলেছে ‘শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র’

- Advertisement -

‘শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র’-এর বহুমুখী কার্যক্রম যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখবে। তাদের বিভিন্ন ধারার কাজের মধ্যে অন্যতম অবশ্যই বৃক্ষরোপণ। এক্ষেত্রে এরা প্রতি বছর নিয়ম করে সুন্দরবন এলাকা জুড়ে তাল ও খেঁজুরের দানা রোপণ করে থাকে। এমনিতেই দিনের পর দিন অকারণে ও অবৈজ্ঞানিকভাবে বৃক্ষচ্ছেদনের জন্য সুন্দরবন এর জৌলুস হারিয়ে যাচ্ছে। ফিকে হয়ে যাচ্ছে তার সবুজ বনানীর। সেক্ষেত্রে ‘শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র’-এর নিয়মমাফিক এই বৃক্ষরোপণের ফলে সবুজায়নে যথেষ্ট সাড়া জাগিয়েছে জয়নগর ও বহড়ু মোয়া অঞ্চলে।


সুন্দরবন
Image by Bishnu Sarangi from Pixabay

১৯৭০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সুন্দরবন এর সামগ্রিক উন্নয়নের দাবি নিয়ে প্রত্যন্ত এই অঞ্চলের ৩ যুবক, ডাঃ স্বপন কুমার দাশগুপ্ত, ডাঃ বলীন্দ্র কুমার বৈদ্য ও সমাজকর্মী অরবিন্দ সরকার পায়ে হেঁটে দিল্লি অভিযান করেছিলেন। এবং তাঁদের দাবি-দাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর দফতরে। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীও তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭২ সাল নাগাদ সুন্দরবন এর রায়দিঘিতে এসেছিলেন সামগ্রিক পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখতে। বলা বাহুল্য, এই ঘটনার পরই সুন্দরবন এর প্রকৃত উন্নয়ন শুরু হয় প্রশাসনিক সহযোগিতায়। পরবর্তীকালে উন্নয়নের অভিপ্রায়ে গঠিত হয়েছিল ‘সুন্দরবন ডেভেলপমেন্ট বোর্ড’।

যাইহোক, দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দীঘি থানার কাশীনগর অঞ্চলের ‘শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র’ সেই উন্নয়নের ধারাকেই সচল করে রেখেছে আজও। সংস্থাটি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠা হয়ে প্রায় ২৫ বছর ধরেই নিরলস দায়বদ্ধতার সঙ্গে সামাজিক এবং পরিবেশবাদী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে নিজেদের এক নিজস্ব পরিচিতিও তৈরি করতে পেরেছে।

এই ‘শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র’-এর বহুমুখী কার্যক্রম যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখবে। তাদের বিভিন্ন ধারার কাজের মধ্যে অন্যতম অবশ্যই বৃক্ষরোপণ। এক্ষেত্রে এরা প্রতি বছর নিয়ম করে সুন্দরবন এলাকা জুড়ে তাল ও খেঁজুরের দানা রোপণ করে থাকে। এমনিতেই দিনের পর দিন অকারণে ও অবৈজ্ঞানিকভাবে বৃক্ষচ্ছেদনের জন্য সুন্দরবন এর জৌলুস হারিয়ে যাচ্ছে। ফিকে হয়ে যাচ্ছে তার সবুজ বনানীর। সেক্ষেত্রে ‘শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র’-এর নিয়মমাফিক এই বৃক্ষরোপণের ফলে সবুজায়নে যথেষ্ট সাড়া জাগিয়েছে জয়নগর ও বহড়ু মোয়া অঞ্চলে।

সংস্থাটি প্লাস্টিক বিরোধী অভিযান, বন্যপ্রাণী বাঁচাও আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছে। বর্তমানে সুন্দরবন এর লুপ্ত হতে চলা ‘মুন্ডা উপজাতি’-র উপর একটি কর্মশালারও আয়োজন করছে। এছাড়াও সংস্থাটি জল নিকাশের ক্ষেত্রে এলাকার একমাত্র ‘লাইভ-লাইন’ তথা এই অঞ্চলের জনবসতি সভ্যতার জন্মদাত্রী প্রাচীন নদী মনিগঙ্গা খালের ভয়াবহ দূষণ ও তার মজে যাওয়া থেকে রক্ষার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে।

- Advertisement -

এব্যাপারে সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট শুভ্রদীপ বৈদ্য জানালেন, মণিগঙ্গা খালের দূষণ ও মজে যাওয়া রুখতে সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে বারবার আবেদন করেও তেমন সুরাহা হয়নি কোনও। কচুরিপানায় মণিগঙ্গা প্রায় ঢেকে গিয়েছে এখন। তাই বাধ্য হয়ে সম্প্রতি এই সংস্থার সদস্য ও ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেরাই পানা নিয়ে প্রজেক্ট শুরু করেছে। নিজেদের সাধ্যমত খাল থেকে পানা তুলছে এবং সেই পানা দিয়ে জৈব সার তৈরিরও প্রস্তুতি নিয়েছে।

তবে এত কিছুর পরেও ‘শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র’ ভোলেনি সেই ৩ দুঃসাহসী যুবক (ডাঃ স্বপন কুমার দাশগুপ্ত, ডাঃ বলীন্দ্র কুমার বৈদ্য ও সমাজকর্মী অরবিন্দ সরকার)-কে। প্রকৃতপক্ষে তাঁদের জন্যেই আজ অন্ধকার থেকে আলোর অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছে সুন্দরবন। আর তাই তাঁদের কথা স্মরণ করেই সংস্থাটি গত এক বছর ধরে ‘পদব্রজে দিল্লি অভিযান’-এর সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করে চলেছে। এই উপলক্ষে তারা চালু করেছে ‘Academy of Environment and Sundarbanlogy’। এখানে প্রথম বছরেই ভর্তি হয়েছে ৭০ জন ছাত্র-ছাত্রী। তাঁদের ক্লাস নিচ্ছেন সুন্দরবন এর বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞগণ।

- Advertisement -

এই রকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সাম্প্রতিক খবর