রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা গবেষণার কাজে সার্বিয়ার পার্মাফ্রস্ট অঞ্চলে বরফের নিচে খননকার্য চালাচ্ছিলেন। তখনই বরফাচ্ছন্ন মাটির কোর থেকে ওই আণুবীক্ষণিক বহুকোষী প্রাণীদের সন্ধান পান তাঁরা। আবিস্কৃত প্রাণীদের নাম দেওয়া হয়েছে ডেলোইড রোটিফার্স। পরে কার্বন ডেটিং-এর মাধ্যমে তাদের বয়স নির্ধারণ করা হয়। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এত দীর্ঘ সময় ধরে ওই প্রাণীরা মূলত ঘুমিয়েই ছিল। এই অবস্থায় তাদের বিপাক ক্রিয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

ভাবা যায়! ২৪ হাজার বছর ধরে বরফের নিচে ঘুমিয়ে ছিল তারা! অবশেষে ঘুম ভাঙল রাশিয়ার একদল বিজ্ঞানীর ডাকে। বরফের নিচে খননকার্যের সময় হদিশ পাওয়া গেল তাদের। তারপর রেডিও কার্বনডেটিং-এর মাধ্যমে তাদের বয়স নিশ্চিত করেছেন ওই বিজ্ঞানীরা। তাতেই এক কথায় বিস্মিত হয়েছেন তাঁরা। কীভাবে অত দীর্ঘ সময় বিনা বিপাক ক্রিয়ায় ঘুমিয়ে ছিল তারা, এই বিষয়টিই সবচেয়ে অবাক করেছে তাঁদের।
সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা গিয়েছে, মেরুদণ্ডী প্রাণীদের ক্ষেত্রে নরওয়ের এক প্রজাতির ‘আইস ফ্রগ’ প্রায় ৭-৮ মাস বরফের নিচে বিনা বিপাক ক্রিয়ায় ঘুমিয়ে থাকতে পারে। এই অবস্থায় তাদের মৃত বলে ঘোষণা করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকে না। হৃৎপিণ্ডের গতিও সে সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
অথবা, ‘আফ্রিকান বাফেলো’-র শরীরে বসবাসকারী এক প্রজাতির পরজীবীদের দিব্যি ১০-১২ বছর বিনা আহারে বেঁচে থাকতে দেখা গিয়েছে। এক্ষেত্রে ‘আফ্রিকান বাফেলো’-র মৃত্যুর পর ওই পরজীবীরা মৃত স্থানেই অবস্থান করে। মৃতের শরীর নষ্ট হয়ে মাটিতে মিশে যাওয়ার পরেও তারা স্থান পরিবর্তন করে না। ১০-১২ বছরের মধ্যে অন্য কোনও ‘আফ্রিকান বাফেলো’-র শরীর পেলে তারা নতুন শরীরে আশ্রয় নেয় বেঁচে থাকার তাগিদে।
যাইহোক, এইরকম উদাহরণ ঝুড়ি ঝুড়ি রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সময়টা বেশ অনেকটাই দীর্ঘ, প্রায় ২৪ হাজার বছর। সিএনএন সংবাদ মাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী, রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা গবেষণার কাজে সার্বিয়ার পার্মাফ্রস্ট অঞ্চলে বরফের নিচে খননকার্য চালাচ্ছিলেন। তখনই বরফাচ্ছন্ন মাটির কোর থেকে ওই আণুবীক্ষণিক বহুকোষী প্রাণীদের সন্ধান পান তাঁরা। আবিস্কৃত প্রাণীদের নাম দেওয়া হয়েছে ডেলোইড রোটিফার্স। পরে কার্বন ডেটিং-এর মাধ্যমে তাদের বয়স নির্ধারণ করা হয়।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এত দীর্ঘ সময় ধরে ওই প্রাণীরা মূলত ঘুমিয়েই ছিল। এই অবস্থায় তাদের বিপাক ক্রিয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অর্থাৎ এটা প্রমাণ হল যে, ওই প্রাণীদের দীর্ঘ সময় ব্যাপী ‘ক্রিপটোবায়োসিস’ সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে। যদিও এটাই প্রথম নয়। এর আগেও হাজার বছরের পুরনো কোর থেকে ঘুমন্ত প্রাণীদের জাগিয়ে তোলা হয়েছে।