কাতাতুম্বা নদীটির জন্ম পাশের দেশ কলম্বিয়ায়। সেখান থেকে প্রবাহিত হয়ে ভেনেজুয়েলায় প্রবেশের পর মারাকাইবোত হ্রদে এসে মিশেছে। তবে চলার পথে বড্ড খামখেয়ালি এই নদী। বহুবার নিজের গতিপথ পালটে চলেছে। আর প্রতিবারই নিজের সঙ্গে বয়ে নিয়ে গিয়েছে কাদামাটি, মরা উদ্ভিজ্জ ও প্রাণীজ অংশ। যেখানেই নিজের গতি কমিয়েছে বা প্লাবিত হয়েছে স্তূপাকারে জমা করেছে ওই অংশগুলি।

এক সময়ে গ্রামটি ছিল সবুজ। পানীয় জল, যাতায়াতের পথ, বিদ্যুৎ সবই এখানে ছিল স্বাভাবিক। বাসিন্দাদের জীবন কাটত নিশ্চিন্তে। একজনের বিপদে অন্যে এগিয়ে আসত সব সময়। এখন সেই গ্রামটিই যেন কঠোর হয়ে উঠেছে তাদের কাছে। এখানে সবুজ রয়েছে, কিন্তু সতেজ নেই। জীবন রয়েছে, কিন্তু বেঁচে থাকার রসদ নেই। তাই একে একে গ্রাম ছেড়ে তারা অন্য কোথাও পাড়ি দিতে শুরু করেছেন। এক সময়ের সাজানো এই সবুজ গ্রাম আজ তলিয়ে যাচ্ছে কালের গহ্বরে। কোনও এক অদৃশ্য অভিশাপ গ্রামটিকে যেন গিলে ফেলছে একটু একটু করে।
ভেনেজুয়েলার ছোট্ট গ্রাম কঙ্গো মিরাডর এর অবস্থা এখন এমনই। এক সময়ে শান্ত ও ধীর-স্থির এক জীবন্ত হ্রদের ধারে গড়ে উঠেছিল এই গ্রামটি। এখানকার বাসিন্দারা বেশ সুখেই ছিলেন এতদিন। তবে বিগত বছর কয়েক ধরে তাদের সেই সুখ ছিনিয়ে নিয়েছে পাশের প্রবাহিত নদী কাতাতুম্বা।
আসলে এই কাতাতুম্বা নদীটির জন্ম পাশের দেশ কলম্বিয়ায়। সেখান থেকে প্রবাহিত হয়ে ভেনেজুয়েলায় প্রবেশের পর মারাকাইবোত হ্রদে এসে মিশেছে। তবে চলার পথে বড্ড খামখেয়ালি এই নদী। বহুবার নিজের গতিপথ পালটে চলেছে। আর প্রতিবারই নিজের সঙ্গে বয়ে নিয়ে গিয়েছে কাদামাটি, মরা উদ্ভিজ্জ ও প্রাণীজ অংশ। যেখানেই নিজের গতি কমিয়েছে বা প্লাবিত হয়েছে স্তূপাকারে জমা করেছে ওই অংশগুলি।
কঙ্গো মিরাডর যে হ্রদের ধারে গড়ে উঠেছে, কাতাতুম্বা যেন তাকেও ছাড়েনি। প্লাবিত হয়ে তার স্রোতের সঙ্গে বয়ে আনা অংশগুলি হ্রদের জলে জমা করেছে বছরের পর বছর। নোংরা-আবর্জনায় তাই কঙ্গো মিরাডর এখন হয়ে উঠেছে বাসের অনুপযোগী। এক সময়ে যে গ্রামে প্রায় ৭০০ মানুষের বসতি ছিল এখন সেখানে বসবাস করছে মাত্র ১০টি পরিবার।
অতি কষ্টে কোনও রকমে টিকে রয়েছেন এই পরিবারগুলি। নদীর জলে বয়ে আসা আবর্জনার স্তুপাকারের জন্য গ্রামে প্রবেশের নির্দিষ্ট কোনও পথও এখন নেই। নেই নিরাপদ পানীয় জলের সুব্যবস্থা। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন কয়েক বছর ধরেই। ভেনেজুয়েলা এমনিতেই খনিজ তেলের দেশ। এখানকার সাধারণ মানুষেরা জ্বালানি তেল পান প্রায় বিনামূল্যেই। সেখানে কঙ্গো মিরাডর এর বাসিন্দাদের এখন চড়া দামেই কিনতে হচ্ছে সেই তেল।